প্রকাশিত: Fri, Jun 28, 2024 10:58 AM
আপডেট: Sun, Jun 22, 2025 10:05 AM

[১]শিশুদের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নির্ভর জ্ঞানের মাধ্যমে গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ প্রধানমন্ত্রীর

ইকবাল খান: [২] প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘আমাদের একদিন চাঁদে যেতে হবে। আমাদের চাঁদকে জয় করতে হবে। কাজেই আমরা আমাদের সন্তানদের শৈশব থেকেই বিজ্ঞান ভিত্তিক শিক্ষা দিতে হবে।’ সূত্র: বাসস

[৩] প্রধানমন্ত্রী বৃহস্পতিবার সকালে শিশুদের মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করার অঙ্গীকার পূণর্ব্যক্ত করে ‘জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ-২০২৪’ উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন। রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

[৪] প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে ব্যক্তি ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ‘প্রাথমিক শিক্ষা পদক-২০২৩’ ও প্রদান করেন।

[৫] তিনি বলেন, আমি আজ এটাই চাই যে আমাদের বাংলাদেশ ২০৪১ সাল নাগাদ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ হিসেবে গড়ে উঠবে। যেখানে আমাদের স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট গভণমেন্ট, স্মার্ট ইকোনমি এবং সোসাইটি ও স্মার্ট হবে। আমাদের আজকের শিশুরা আগামীদিনের স্মার্ট বাংলাদেশের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব নেবে। প্রজন্মের পর প্রজন্ম যেন একটা সুন্দর জীবন পেতে পারে সে জন্য ‘ডেল্টা পরিকল্পনা-২১০০’ প্রণয়ন করে বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে।

[৬] প্রধানমন্ত্রী বলেন, কাজেই সেই লক্ষ্য নিয়েই আমাদের শিশুদের শিক্ষা-দীক্ষায়, সংস্কৃতি চর্চা, খেলাধূলা সবদিক থেকেই উপযুক্ত নাগরিক হিসেবেই তাদের গড়ে তুলতে চাই। আর তা করার জন্য যা যা করণীয় অবশ্যই আমরা তা করবো।

[৭] আজকের শিশু আগামী দিনের নাগরিক ও এই দেশের কর্ণধার হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই শিশুদের মধ্য দিয়েই কেউ মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী হবে, বড় বড় সংস্থায় চাকরি করবে, বৈজ্ঞানিক হবে। এমনকী এক সময় তো আমাদের চাঁদেও যেতে হবে। চাঁদও জয় করতে হবে। 

[৮] তিনি বলেন, ‘সেই বিজ্ঞান সম্পন্ন জ্ঞান যেন আমাদের শিশুরা এখন থেকেই পায় সেই জন্য ব্যবস্থা করতে হবে। ইতোমধ্যে গবেষণা ও শিক্ষার জন্য আমি বিশ^বিদ্যালয় করে দিয়েছি। অ্যারোস্পেস এন্ড এভিয়েশন বিশ^বিদ্যালয়ও (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়) করেছি। অ্যারোনটিক্যাল সেন্টার করে দিয়েছি।  কাজেই এখন থেকেই আমাদের শিশুদের সেইভাবে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।

[৯] অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ১২৬ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ‘প্রাথমিক শিক্ষা পদক-২০২৩’ ও প্রদান করেন।

[১০] শিক্ষা সপ্তাহ উপলক্ষে ১৮টি ক্যাটাগরিতে ১২৬ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩৬ জন শিক্ষার্থী, ১৫ ব্যক্তি এবং তিনটি সংস্থা সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক গ্রহণ করেন।

[১১] প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলী এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।

[১২] অনুষ্টানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষার উন্নয়নে সরকার গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের ওপর একটি প্রামান্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়।

[১৩] প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকারের পদক্ষেপের ফলে স্বাক্ষরতার হার ৭৮ শতাংশে উন্নীতকরণ, উচ্চশিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নারী শিক্ষার্থীদের সংখ্যা তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। 

[১৪] তিনি বলেন, আমরা একটা সুষম জনকল্যাণ মুখী সার্বজনীন মান সম্মত শিক্ষা ব্যবস্থা প্রণয়ন করতে চাই। যেখানে শুধু কেতাবী পড়া পড়ে নয়, এই ছোট্ট শিশুদের ভেতরে যে মেধা মননশীলতা সেই গুলো আমাদের বের করে আনতে হবে। তাদের সুযোগ দিতে হবে। তাদের ভেতরে যে একটা কিছু করার ক্ষমতা রয়েছে সেটাই যাতে বিকশিত হতে পারে, সেই সুযোগ সৃষ্টি করা দরকার।

[১৫] সরকার প্রধান বলেন, সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা শিক্ষা কারিকুলাম আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর জ্ঞানের পথে নিয়ে আসছি। অনেক স্কুল হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য প্রতিটি স্কুলেই আমরা কম্পিউটার ল্যাব করে দেব এবং যেটা প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো থেকেই শুরু হবে। আর আমরা প্রাক-প্রাথমিকও চালু করেছি যেটা এখন দুই বছরের জন্য করতে চাচ্ছি। যেখানে পড়াশোনা নয়, বাচ্চারা যাবে একসঙ্গে বসবে, সবার সঙ্গে খেলাখূলা করবে।

[১৬] প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবচেয়ে বড় কথা আজকের যুগ হচ্ছে প্রযুক্তির যুগ। কম্পিউটার প্রশিক্ষণে আমরা যেমন ল্যাব করে দিচ্ছি, তেমনি ইনকিউবেশন সেন্টারও করে দিচ্ছি। কারণে সেভাবেই একটি আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন একটি জনগোষ্ঠী আমরা গড়ে তুলতে চাই। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই সবধরনের ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি।

[১৭] সরকার প্রধান বলেন, ‘শুধু বই পড়ে নয়, স্বচক্ষে দেখে শিক্ষা নিতে হবে। এই ছোট্টবেলা থেকে যতবেশি তারা শিখতে পারবে ততই ভালো। আর ছোটদের খুব বেশি শিখতে হয় না তারা সহজেই পেরে যায়, এটা হলো বাস্তবতা।’